কর্মক্ষেত্রের ঝুঁকি

এসএসসি(ভোকেশনাল) - জেনারেল মেকানিক্স- ১ - জেনারেল মেকানিক্স -১ | | NCTB BOOK

ঝুঁকি, দুর্ঘটনা, ভয় ইত্যাদি বোঝাতে সাধারণত বিপদ বা ঝুঁকি (Risk) শব্দটি ব্যবহৃত হয়। শিল্পকারখানায়, বিপদ হলো যেকোনো অস্বভাবিক ব্যবস্থা যা অসুবিধা সৃষ্টি করে। ফলে অগ্নিকাণ্ড, বিস্ফোরণ, বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণ ইত্যাদি ঘটনা ঘটতে পারে। ভয়াবহ বিপদ কর্মস্থলে মৃত্যু, সম্পদের ক্ষতিসাধন, পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব অথবা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ৰাধা সৃষ্টি করে।

চিত্র-১.১৬ কর্মক্ষেত্রের ঝুঁকি

১.৬.১ বিভিন্ন প্রকার ঝুঁকি

(১) বৈদ্যুতিক ঝুঁকি

* পর্যাপ্ত সুরক্ষা ছাড়া বৈদ্যুতিক শকে আহত কাউকে স্পর্শ করা;

* দুর্বল তাপ নিরোধক ও ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা; খালি পায়ে বৈদ্যুতিক লাইনে কাজ করা ইত্যাদি।

চিত্র-১.১৭ বৈদ্যুতিক ঝুঁকি

(২) যান্ত্রিক ঝুঁকি সরঞ্জাম বা যন্ত্রপাতির 

তিনটি স্থানে যান্ত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে, যথা-

• পরিচালনার ক্ষেত্রে;

• যান্ত্রিক শক্তি ট্রান্সমিশন কেন্দ্রে ; যন্ত্রপাতির ঘূর্ণন এলাকায় ইত্যাদি।

(৩) অগ্নি ঝুঁকি নিম্নলিখিত কারণে অগ্নি ঝুঁকি হতে পারে-

- কাঠ, কাগজ, কাপড় ও অন্যান্য সাধারণ উপকরণ নির্দিষ্ট স্থানে না রাখলে;

- পেট্রোল, তৈল, গ্রিজ ও দাহ্য পদার্থের সংরক্ষণ সঠিকভাবে না

- রাখলে; বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে;

- ধুমপানের কারণে ও অগ্নি ঝুঁকি হতে পারে ইত্যাদি।

১.৬.২ ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) ক্রম ৰা পৰ্যায়

কর্মক্ষেত্র থেকে ঝুঁকির কারণ সম্পূর্ণ রূপে দূর করাই সবচেয়ে ভালো উপায়। উদাহরণস্বরূপ: 

- একটি শান্ত পরিবেশ থেকে একটি শব্দ সৃষ্টিকারী মেশিন সরিয়ে নিতে হবে। অ্যাজমা

- বিপদ সৃষ্টিকারী পদার্থের পরিবর্তে কম ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করতে হবে। যেমন- বৃদ্ধিকারক পদার্থ থাকবেনা এমন পেইন্ট ব্যবহার করতে হবে।

- কর্মক্ষেত্র থেকে বিপত্তি সরিয়ে ফেলা যেমন- ভৌতিক (শারীরিক) বিপদকে কর্মক্ষেত্র থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে অথবা যেস্থানে মেশিনটি ব্যবহৃত হচ্ছে ঐস্থানকে ঢেকে রাখতে হবে।

-  উৎস থেকে বিপত্তি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। বিপদের উৎস বন্ধ করার জন্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির ডিজাইন পুনরায় করতে হবে। গার্ড অথবা বায়ু চলাচলের ব্যবস্থার জন্য পুনরায় ডিজাইন করতে হবে।

- প্রশাসনিকভাবে ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ- এটি প্রশাসনিক কৌশল, যা কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। প্রশাসনিকভাবে বিপত্তি নিয়ন্ত্রণের জন্য দুষিত জায়গায় শ্রমিকদের অল্প সময়ব্যাপী কাজ করার ব্যবস্থা করতে হবে। এটি শ্রমিকদের সময় ভাগ করে দিয়ে অথবা অন্য কোনো নিয়ম প্রয়োগ করে করতে হবে।

১.৬.৩ ঝুঁকি অপসারণ

যেখানে কোনো বিপত্তি নেই সেখানে আঘাত পাওয়া বা অসুস্থ হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়-

,• এলোমেলো জঞ্জাল দূর করে পায়ে হোঁচট লাগারমতো বিপত্তি দূর করতে হবে;

• অপ্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ বর্জন করতে হবে;

• ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতি পরিহার করতে হবে; ক্ষতিগ্রস্থ যন্ত্রপাতি অতি দ্রুত মেরামত করতে হবে।

১.৬.৮ ঝুঁকি সৃষ্টিকারী মালামাল ও যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন

বিপদ দূর করা সম্ভব না হলে কম ঝুঁকিসম্পন্ন বিকল্প কিছু ব্যবস্থা করতে হবে। এটি এমনভাবে করতে হবে যেন সন্তোষজনকভাবে একই ধরনের কাজ সম্পাদন করা যায়। যেমন-

• বিপদ সৃষ্টিকারী পদার্থের পরিবর্তে কম ক্ষতিকারক দ্রব্য ব্যবহার করতে হবে; 

• যেখানে সবসময় টেলিফোন ব্যবহৃত হয় সেখানে হ্যান্ডসেটের পরিবর্তে হেডসেট ব্যবহার

• বাষ্পীয় বিপত্তি নিয়ন্ত্রণের জন্য কম ক্ষতিকারক দ্রব্য ব্যবহার করতে হবে ইত্যাদি।

১.৬.৯ দুর্ঘটনা

দুর্ঘটনাকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যে, দুর্ঘটনা হলো একটি অপরিকল্পিত এবং অনিয়ন্ত্রিত ঘটনা যা কোনো বস্তু স্থির বা চলমান, কোনো কাঠামো, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), পদার্থ (কাঁচামাল, উৎপাদন, রাসায়নিক দ্রব্য ইত্যাদি) বা তেজস্ক্রিয় বস্তুর সাথে ক্রিয়া অথবা বিক্রিয়ার ফলে ব্যক্তিগত আঘাত বা ধনসম্পদ বা পরিবেশগত ক্ষতির সম্ভাবনা হতে পারে।

ওয়ার্কশপে নিম্নলিখিত চারটি কারণে সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে-

চিত্র-১.২১ (ক) দুর্ঘটনা

• কর্মীদের অসাবধানতা ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকান্ড;

• ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রপাতি/ মেশিন ব্যবহার; ত্রুটিপূর্ণ উপায়ে মালামাল বহন;

• ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতিতে কাজ করা।

দুর্ঘটনার ফলাফল: জীবন হারানো বা কর্মীর ক্ষতি অথবা সম্পদ বা পরিবেশ ধ্বংস।

১.৭ প্রাথমিক চিকিৎসা

হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনায় আহত বা অসুস্থ্য লোককে নিকটস্থ ডাক্তারখানা বা হাসপাতালে নেওয়ার আগে ঘটনা স্থলে তাৎক্ষণিকভাবে যে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাই প্রাথমিক চিকিৎসা বা ফাস্ট এইড। অনেক সময় প্রাথমিক চিকিৎসার সাহায্যে একজন রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়। তাছাড়া রোগীকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত রোগীর অবস্থার অবনতি যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে জীবিত বা সুস্থ্য রাখার ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা বলা হয়।

চিত্র-১.২১ (খ) দুর্ঘটনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা

প্রাথমিক চিকিৎসার উদ্দেশ্য

• জীবন রক্ষা করা;

• গুরুতর আঘাতের পর অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়া থেকে বিরত রাখা; 

• অবস্থার উন্নতিতে সাহায্য করা ইত্যাদি।

১.৭.১ প্রাথমিক চিকিৎসা বক্সে যেসব জিনিসপত্র থাকে-

• জীবাণুনাশক তরল 

• জীবাণুনাশক ক্রীম

• থার্মোমিটার জীবাণুমুক্ত গজ

• ব্যাণ্ডেজ

• জীবন রক্ষাকারী জরুরি ঔষধ 

• খাবার স্যালাইন

• জীবাণুমুক্ত তুলা

•  অ্যাডহ্যাসিড ড্রেসিং

• স্যালাইন ইত্যাদি 

চিত্র-১.২১(গ) ফার্স্ট এইড বক্স

১.৮ আগুন এবং আগুন নেভানোর কৌশল 

অক্সিজেন, কুয়েল ও তাপ এই তিনটি উপাদানের সমন্বয়ে আগুন ধরে। এই তিনটি উপাদানের যেকোনো একটি ছাড়া আগুন লাগতে পারেনা।

১.৮.১ আগুনের উৎস ও আগুন নেভানোর উপকরণ 

আগুনের শ্রেণিভেদে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র/উপকরণসমূহ

Content added || updated By
Promotion